Friday, July 12, 2024

ভাল থাকা


যথারীতি ছাতা হাতে সকালে লেকে হাঁটার জন্য বেরিয়ে পড়লাম l রাত্তির 2 থেকে বৃষ্টি হচ্ছে l লেক প্রায় ফাঁকা, আমারো বিছনা ছাড়তে ইচ্ছে হচ্ছিল না,বেশ ঝাঁপিয়ে বৃষ্টি হচ্ছিল!

আমাদের বয়সে অভ্যাস টা নিয়ম মত চালিয়ে যেতে হয় l
ঐ যে ওঠার পর ফ্রেশ হয়ে নিয়ে একটু ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করা,তার পর চা বিস্কুট, কিছু ড্রাই ফ্রুট ব্যাস হাঁটার জন্য তৈরি l
লিফট অপারেটর প্রাণেশ হেঁসে বললো কি স্যার বৃষ্টি তেও ছাতার দিকে ইশারা করে l আমি মাথা নাড়লাম, ছেলেটা ভালো,ও জানে আমি কখন বের হই তখন লিফট থামিয়ে বেরিয়ে আমার জন্য অপেক্ষা করে অবশ্য কোনো কল না থাকলে!
আমদের বয়সে কেউ যখন চেনে তখন ভালই লাগে, retirement এর পরে লোকে আস্তে আস্তে ভুলতে বসে l আমরা যারা হাউজিং সোসাইটি থাকি তাদের একে অন্যর সংগে লিফটে তো দেখা হয়ে যাইই, তার পর ঘাড় নেড়ে বলা "ভাল" l কিন্তু যারা নিজের বাড়ি তে থাকে তাদের অবশ্য পাসের বাড়ীর সংগে আলাপ কিম্বা কাজের মাসির সংগে কথা বলা l সেদিন WhatsApp এ মেসেজ পেলাম যে যাদের বয়েস হচ্ছে তাদের বেশি করে কথা বলা l কথা না বললে আস্তে আস্তে আলজেইমার রোগ ধরবে lআমার বউ তো বলে আমি বেশি কথা বলি l শুনেছি আমাদের এক আন্তিও যে বেস বড় পোস্ট থেকে retire করার পর পয়সা দিয়ে বাচ্চা ছেলেদের ডেকে গালা গাল দিত, যতদুর মনে হয় তিনি ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন ইউপি তে, এলাহাবাদে থাকতেন! ঐ গালা গাল দেওয়া অভ্যাস ছিল, চোর ছেচড় কে নিয়ে ডিল করতে করতে গালা গাল দেওয়া অভ্যাস হয়ে গেছিল !
আমার অবশ্য ঐ রকম কোনো ইস্যু নেই হ্যাঁ এই একটু আড্ডা হলে মন্দ হয় না l
আমায় দেখে কেউ হাঁসলে অমি ও হেঁসে হাত তুলে বলি "ভাল তো"! অচেনা তো কি হয়েছে,এই তো সেদিন DKS ক্লাব বউয়ের সংগে বিকেলে চা আর চিকেন কাটলেট খেতে গিয়ে ছিলাম l কিছু দূর প্রায় আমার বয়সী একজন রোল খাচ্ছিল আর আমার দিকে তাকাচ্ছিল, কোথায় দেখেছি টাইপ, প্রায়ই হয় এরকম l
বিল সাইন করে উঠলাম যাবার সময় ওনাকে বললাম ভাল, হেঁসে বললেন হাঁ,আলাপ করলাম নিজের নাম বলে l ওনার নাম কুন্তল, বউ জিগেশ করলো চেনো ওনাকে, নাতো,এখন আর চেনার দরকার পড়ে না l হেঁসে কথা বলাই একটা বড় পাসপোর্ট l
যা বল ছিলাম বৃষ্টি তে লেকে হাঁটতে হাঁটতে এক marwari ভদ্রলোক আমাকে ছাতা নিয়ে হাঁটতে দেখে মাথা নাড়ল আমিও হেঁসে হাত নাড়লাম l ভাল লাগল যে দূর থেকে আরেক জনের সঙ্গে  আলাপ হল!
এগুলো কে ইংরেজি তে বলে নোড্ডিং একুইন্টেন্স l
কিশোরের হিন্দি গান মনে পড়ে গেলো প্যার কিয়ে যা!
ভাগ্য ভাল যে আমদের চার দিকে এত লোক কথা বলার জন্য, শুধু একটু সহানুভূতি দরকার l
শেষ করি, বৃষ্টি এখনও পোড়ছে আর খিচুড়ির গন্ধ রান্না ঘর থেকে ভেসে আসছে!

3 comments:

Sukhen Mukherjee said...

সাবলীল ভঙ্গীমায় লেখা। মজা পেলাম।

Sabyasachi Chowdhury said...

সাবলিল ভাবে নিজের ভাললাগা গুলোকে তুলে ধরেছেন। শরীরচর্চা যেমন শরীরকে সুস্থ রাখে, মনখুলে আলাপচারিতা, শুভেচ্ছা বিনিময় মনকে সতেজ ও সুস্থ রাখে। আপনার সুস্থ ও সদা হাস্যমুখ, আনন্দমুখর থাকার রহস্য আপনার সযত্নে লালিত সুঅভ্যাস। ভাল থাকবেন স্যার।

samaranand's take said...

ধন্যবাদ সুখেন ও সব্যসাচী, ভাবলাম আমার দৈনন্দিন জীবনের কিছু অংশ ভাগ করি সবার সঙ্গে!