Showing posts with label camelia hotel shantiniketan. Show all posts
Showing posts with label camelia hotel shantiniketan. Show all posts

Friday, June 28, 2024

সেদিন টা আর ফিরে পেলাম না


ক্যামেলিয়া হোটেলে আমি ,শ্যামল আমাদের বন্ধু দ্বিজদাসের সঙ্গে গল্প গুজব কিছু খোয়া দাওয়া l সময় টা 1997 যখন আমি প্রতি মাসে শান্তিনিকেতন যেতাম বক্রেশের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র রিভিউ করতে l প্রজেক্টে যাওয়া, তারপর শান্তিনিকেতনে একটা চক্কর , দ্বিজ আমাদের জন্য অপেক্ষা করত l দ্বিজ আমার ছোটবেলার বন্ধু l ও আমার সঙ্গে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে দিল্লির রাইসিনা স্কুল থেকে l

ঐ 1997 এ দ্বিজ তখন শান্তিনিকেতনের রেজিস্ট্রার l সেই জন্য আমাদের কোনো অসুবিধে হয় নি রবীন্দ্র ভবন ঘুরে দেখা l

ঘুরতে ঘুরতে ভাবতাম দ্বিজ বেশ আছে ওই রকম এক শান্ত পরিবেশ l হিংসে হত l

যা বলছিলাম ঐ ক্যামেলিয়া হোটেলে আড্ডা দেওয়া l আমি বললাম “দ্বিজ বেশ আছ, এই রকম গাছ পালার মধ্যে “

ও হেঁসে উঠলো আর বললো ও রকম মনে হয়, আমার এই নিস্তরঙ্গ জীবনে তোমরা এলে একটু তরঙ্গ আসে l

আমি অবাক, এ যেন নদীর ওপার সকলের মনে হয় এপারের চেয়ে বেশী সবুজ l

দ্বিজ আমাদের স্কুলের সকালের প্রার্থনা টা আবৃত্তি করত l

চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির,

জ্ঞান যেথা মুক্ত,যেথা গৃহের প্রাচীর 

আপন প্রাঙ্গণতলে দিবসশর্বরী 

বসুধারা রাখে নাই খন্ড ক্ষুদ্র করি,

ইত্যাদি 

ওই রকম রিভিউ মিটিং র জন্য একবার আমাদের ডিরেক্টর লাহড়ি সাহেব এসে ছিলেন, আমরা যথা রীতি ওনাকে নিয়ে শান্তিনিকেতনে যাওয়া, দ্বিজর সঙ্গে আলাপ করানো l

আমি বললাম ও আমাদের স্কুলে সকালের প্রার্থনা করত l

রবীন্দ্র ভবনের বাইরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে এসব কথা হচ্ছিল, তখন রবীন্দ্র নাথের আসবাব পত্র, পাণ্ডুলিপি, মিউজিয়াম ইত্যাদি দেখা হয় গেছে l

ঐ বাইরের বারান্দায় দরজার দু পাশে চিত্ত যেথা কবিতা টা ইংরাজি আর বাংলায় লেখা l

দ্বিজ কে অনুরোধ করলাম দুটোই পড়তে l

স্কুলে যখন আবৃত্তি করত তখন গলা অন্য , অতটা ভাঙ্গেনি l

কিন্ত সেদিন ও ওর দরাজ গলায় যখন  দুটোই পড়লো তখন আমরা প্রায় মন্ত্র মুগ্ধ,আমার তো চোখে জল এসে গেছিল!

সেন্টিমেন্টাল হয়ে ওকে জড়িয়ে ধরলাম l

ঐ শন্তিকেতনের পরিবেশ টা আলাদা স্কুলের তুলনায় l

আমার মনের কোঠা য় এখনও ওই মুহুর্ত টা ধরা আছে, লাহিড়ি সাহেব গত হয়েছেন , দ্বিজ এখন কোথায় জানিনা, শ্যামলের সঙ্গে মাঝে মধ্যে দেখা হয় l

Retirement এর পর প্রায় প্রতি বছরি শান্তিনিকেতনে যাই কিন্তু সেদিনের পরিবেশ টা পাইনা l 

এখন ওখানে যাওয়া মানে শোনাঝুড়ির হাট, সিনেমার দেখানো কোন একটা রিসোটে থাকা, খাওয়া দাওয়া আর  কাঁকালীতলা যাওয়া l

কাঁকালী তলা গেটের সামনে বটতলায় মার নামে যাত্রী দের বসার জন্য একটা বেদি বানিয়ে দিয়েছিলাম, তখন গেটটা ছিল না l ওটা বাস স্ট্যান্ড l

ঐ গেটের আর্কিটেক্ট দের ধন্যবাদ যে ঐ বেদি টা পুরো ভাঙ্গে নি, 

স্বর্গিয়া সুষমা রায়, বিপ্রটিকুরি লেখাটা এখনও আছে ওই বেদির ওপর  ! প্রায় পঁচিশ বছর আগে মায়ের স্মৃতিতে বানিয়ে ছিলাম, আমার মামা বাড়ি বিপ্রিটিকুরি ,কঙ্ককালী তলা থেকে 7 কিলোমিটার দূরে