Friday, April 19, 2024

আমর বাউল সময়

আমি জোরে হাঁটছি, পেছন ফিরে তাকাই,সে ও আমার পেছনে, কেউ আমাকে ধরার জন্য আসছে কি, কই কোনও ইউনিফর্ম তো নেই l সন্ধার আলোয় বুঝতে পারছিনা, জোয়ান না বুড়ো, ছেলে না মেয়ে l
আমি কি ভুল দেখছি, হয়ত আমার ভুল , আমাদের জীবনে ফেলে আসা কত কি আমাদের পিছু ছাড়ে না l
এই তো সেদিন একজন আমাকে দেখে হাত নাড়ল আমিও রিফ্লেক্সে হাত  নাড়লাম, হয়ত আমার সঙ্গে আলাপ হয়েছে ,আমার প্রায় দশটা পোস্টিং হয়েছিল ভারতের সব কোনায়,হবে হয়ত সে রকম কোন প্রজেক্টে l

হাসতে হাসতে এগিয়ে এলো, এই মরেছে, তার মুখের দিকে তাকিয়ে চেনার চেষ্টা করলাম, না মনে পড়ছে না,দেখে মনে হলো আমার চেয়ে অনেক ছোট l
জানি চিনতে পারবেন না,তখন তো আমার দাড়ি ছিল,গেরুয়া আর হাতে একতারা,এখনও মনে পড়ছে না, আপনি, ফারাক্কায় ছিলেন,তার পর আমাদের বাউল মেলায় আলাপ, গিরি আলাপ করিয়ে দেয় l
আমার আবছা আবছা মনে আছে সেই আমার ফারাক্কায় পোস্টিংয়ের সময় বাউল মেলায় যাওয়া l
আমি গিরির সঙ্গে একাই গিয়েছিলাম, স্ত্রী কলকাতায় বাপের বাড়ি, বর্মন ড্রাইভার গাড়িতে বসেছিল ;
কথায় কথায় বাউলদের তাম্বুতে যাওয়া আর ওখানে বসে এক জমাটি আড্ডা l একতারা হাতে নিয়ে টুং টুং এক আঙ্গুল দিয়ে,ভয় হল যদি তার ছিঁড়ে যায় l ওদের মধ্যে এক জন ছিলেম টা এগিয়ে দিল l IOC,Barauni তে সরকার যে আমার সঙ্গে ফুটবল খেলত,তার গাঁজার নেশা ছিল,আমি এক দুবার ওর বাড়িতে try করেছি l তাম্বি মালায়লাম ট্রেইনি IOC তে, আমি তার সঙ্গে চরস ও ট্রাই করেছি l সে অবশ্য ৭০এর দশকে l
ছিলেম টা হতে নিয়ে ওদের নকল করে দু হাতে ধরলাম,মনে পড়েগেল উত্তম কুমারের গাঁজার কলকে তে টান রাজলক্ষী শ্রীকান্ত বইয়ে l সুচিত্রা রাজলক্ষী আর উত্তম শ্রীকান্ত l শরৎ বাবুর শ্রীকান্ত আমার খুব প্রিয় চরিত্র তাই কলকে হাতে দুটানের পর নিজেকে শ্রীকান্ত ভাবতে লাগলাম l কোনও চিন্তা নেই কালকের, ব্যাস বিন্দাস,অবশ্য শ্রীকান্তের মত ধুতি, পাঞ্জাবী আর ঝোলা ছিল না,আমি যথা রীতি জিন্স , টি শার্ট আর হাফ জ্যাকেট, তখন পোষ মাস ,শীত একটু একটু পড়েছে, একট বেপরোয়া ভাব,তখন বাউলরা গান ধরেছ নাচতে নাচতে " ওরে ভোলা মন আমার ..." আমিও একটা একতারা নিয়ে ওদের সঙ্গে নাচতে লাগলাম l বেশ ভাল লাগছে মনে হচ্ছে আমার body হালকা হয়ে হওয়ায় ভাসছে, চারি দিকের হ্যাজাকবাতির আলো, এক মায়াবী পরিবেশ l তার পর মনে নেই l
আমর তখন মনে পড়ে গেলো যোগেশ কে,সে এখন আমার সামনে দাঁড়িয়ে শুধু দাড়ি মুছ কাটা প্যান্ট জামা পরা , কিন্ত বাউলের পোশাকে না l
যোগেশ হাসতে হাসতে বলল অবাক হয়ে গেছেছেন না l
না না আপনার সঙ্গে যখন আলাপ হয় আমি তখন যাদবপুরে পড়ি, বাউলদের ওপর একটা পেপার লিখছিলাম তাই সেই কটা দিনের জন্য বাউল হয় যাই, একটু আধটু গিটার বাজাতাম তাই একতারা শিখতে বেশি কষ্ট হয় নি l
তখন আমার সব মনে পড়ে গেল সেদিন ও যেন আমাকে আগলে আগলে রাখছিল , কোনো বিপদে না পড়ি, যত রকম চোর চ্ছেঁচর রা তো এই রকম মেলায় শিকার খোঁজে l
দু তিন টে টানের পর ছিলেম টা ও আমার থেকে নিয়ে নেয় l
আমর মন হঠাৎ করে সেই হারিয়ে যাওয়া দিন গুল তে ঘুর পাক খেতে লাগল l যোগেশ আমাকে কিছুক্ষনের জন্য ফারাক্কার দিন গুল ফিরেয়ে দিল l
আমার ঠিক মনে নেই আমি আমার কোয়ার্টারে কেমন করে ফিরলাম, ওই গাঁজা তো আমাকে আউট করে দিয়েছিল l খাবার খেয়ে ছিলাম কি মনে নেই!
কিন্তূ পরের দিন আমি আমার বিছনায় অবশ্য জিন্স আর টি শার্ট পরে l
যোগেশ হাসতে হাসতে বলল কি মনে পড়েছে  l
আপনিতো গাঁজায় দম দিয়ে বেহুঁশ,আমি আর গিরি আপনাকে ধরে ধরে আপনার গাড়িতে নিয়ে যাই, বর্মন গাড়ি চালিয়ে আমাদের আপনার বাংলো, আপনার পকেট থেকে বাড়ির চাবি,আমি গিরি আপনার জ্যাকেট  খুলে নিচের ঘরের বিছানায় শোয়াই!
পরের দিন আমি কলকাতা ফিরি তাই আর দেখা হয় নি l
রোজ আপনাকে লেকে জগ করতে দেখি তাই আজ আপনাকে থামিয়ে চেক করলাম,ন ভুল হয় নি l তখন আপনার ফ্রেঞ্চ কাট ছিল l
আমি একটু অপ্রস্তুত, হেঁসে জিগেস করলাম কি করো ?
আমি এখন usa তে এক ইউনিভার্সিটি তে পড়াই!
কাছেই লেকে গার্ডেনে পৈত্রিক বাড়ি l
মোবাইল নম্বর নিলাম, আবার দেখা হবে বলে বিদায় l যোগেশের সঙ্গে আমার এক অজানা সময় কাটানো আমাদের দুজনের মধ্যে মনের কোঠায় বাঁধা থাকলো !

2 comments:

Shovabazar amit said...

As they say, life stranger than fiction. Strange recollection from stranger

samaranand's take said...

ধন্যবাদ অমিত!